Saturday, 26 November 2016

সামুদ্রিক

  1. সামুদ্রিক মাছ শিকারে বাধানিষেধ
  2. সামুদ্রিক মাছ শিকার

মানুষ সেই আদিম কাল থেক তার উদর পূর্তির জন্য মাছ শিকার করে আসছে। অন্য ক্ষেত্রে মাছের প্রতিপালন ও চাষ করলেও লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের জীবন ও জীবিকার জন্য সামুদ্রিক মাছ শিকার করে। যুগ যুগ ধরে বিশাল এই জলাশয় থেকে মাছ আমরা ধরেই চলেছি। এই শিকার ও পরবর্তীতে তা গুদাম জাত করা, সদ্য সদ্য খাওয়া ছাড়াও সেগুলো সংরক্ষণ ও বাজার জাত করা ইত্যাদি কাজে লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয় এবং এর ফলে জাতীয় অর্থনীতিতে এর বিরাট ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

সামুদ্রিক মাছ শিকারে বাধানিষেধ




সামুদ্রিক মাছ শিকার করা হয়। আজ পর্যন্ত তাদের প্রতিপালন করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এই বিশাল প্রাকৃতিক ভাণ্ডার থেকে মাছের জোগানে যাতে কোনও দিন ঘাটতি না পড়ে তার জন্য মানুষের হাতে এদের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে মাছের মোট জোগান যেখানে প্রতি বছর ১৬ লক্ষ তন, সেখানে সামুদ্রিক মাছের জোগান মাত্র ৩ লক্ষ টন। এবং এই জোগানও প্রতি বছর উত্তরোত্তর কমছে। যে হেতু আমরা সামুদ্রিক মাছ প্রতিপালন বা সৃষ্টি করতে পারি না, তাই এই ঘাটতি কমানোর দাওয়াই হিসাবে এর ফলন বাড়ানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। কিন্তু আমদের দায়িত্ব অনেক। এই মাছের জোগান উত্তরোত্তর কমার বহু কারণ। কিন্তু যেগুলোর জন্য আমরা সরাসরি দায়ী, সেগুলো সবিশেষ উল্লেখযোগ্য ---
  • (১) যথেচ্ছ মাছ শিকার --- আমরা ভবিষ্যতের কথা মনে না রেখে বিনা বিচারে সব মাছ ধরে নিই। এই প্রক্রিয়ায় অপূরণীয় ক্ষতি হয়। যে সব জাতের মাছ সমুদ্রে বসবাস করে, কিন্তু ডিম পাড়ার জন্য নদীতে আসে, তাদের ক্ষেত্রে মনে রাখা উচিত --- (১) নদীতে আসার পথে তাদের কোনও মতেই শিকার করা চলবে না; (২) ডিম ছাড়ার পরে সমুদ্রে ফিরে যাওয়ার পথে ধরা যেতে পারে; (৩) ডিমওয়ালা মাছ ধরা অপরাধ; (৪) এই ধরনের মাছ ছোট অবস্থাতেও ধরা চলবে না, সমুদ্রে ফেরার পর এদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনচক্র চলতে দিতে হবে; (৫) ডিম পাড়ার জন্য মিঠে জলে নিয়ে আসার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে এবং (৬) নদনদী যাতে দূষিত না হয়, অগভীর না হয়, পরিমাণমতো জল ও তার উপযুক্ত স্রোত যাতে বজায় থাকে তার জন্য আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। কারণ নদনদীর গভীরতা, জলস্রোত, জলের নির্মলতা ইত্যাদির উপর বহুলাংশে এদের নদীতে আসা নির্ভর করে। প্রয়োজনে আইন করে ডিমওয়ালা বা বাচ্চা মাছ এবং অসময়ে মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে।
  • ২) সমুদ্র দূষণের হাত থেকে সমুদ্র বাঁচানো --– সমুদ্রকে দূষণের হাত থেকে বাঁচানোর যথা সম্ভব চেষ্টা করতে হবে। উত্পাদিত সামুদ্রিক মাছের অধিকাংশই সমুদ্র থেকে ধরা হয়। নানা কারণে সমুদ্রের জলকে আমরা দূষিত করে থাকে যা মাছের বংশবিস্তার, বৃদ্ধি ও বসবাসে ব্যাঘাত ঘটায়। নানা ধরনের জলযান সমুদ্রে চলাচল করে। নানা ধরনের যন্ত্র সমুদ্রে কাজ করে। এ সবের বর্জ্য এবং স্থলভূমির বর্জ্যপদার্থ সমুদ্রের জল দূষিত করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সব বর্জ্য মাছের পক্ষে ক্ষতিকারক। এই দূষণ যতটা সম্ভব আমাদের বন্ধ করতে হবে।

সামুদ্রিক মাছ শিকার

জলের গভীরতার উপর ভিত্তি করে সাগরের মাছ শিকারকে দু’ ভাগে ভাগ করা যেতে পারে —
  • (১) সমুদ্রোপকূলবর্তী : সাগরে মানুষ নানা উপায়ে মাছ শিকার করে থাকে। সাধারণ জাল দিয়ে মাছ ধরা থেকে শুরু করে নানা রকম বিশেষ ধরনের জাল বা দেশি বা উন্নত উপায়ে সমুদ্রের ৫ মিটার গভীরতাসম্পন্ন জলে মাছ ধরা এই ভাগের অন্তর্গত। যেমন – ম্যালেট, পার্চ ইত্যাদি।
  • (২) গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা : নানা উপায়ে মানুষ আরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আরও গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। যেমন ম্যাক্রেল, শার্ক ইত্যাদি।
এ ছাড়াও হ্রদ বা মোহনায় মানুষ সাধারণ উপায়ে জীবনের কম ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরে থাকে। এখানে সীমিত প্রজাতির ও অল্প পরিমাণে মাছ পাওয়া যায়।

No comments:

Post a Comment